পলিগ্রাফ টেস্ট হল একটি পরীক্ষা যেখানে কোনো ব্যক্তির শারীরিক প্রতিক্রিয়া যেমন হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার, এবং ত্বকের ঘাম পরিমাপ করে তার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা হয়। এটি একটি "লাই ডিটেক্টর" হিসেবেও পরিচিত।
পলিগ্রাফ টেস্টের ইতিহাস ও বিকাশ
1. উদ্ভাবন ও প্রাথমিক ব্যবহার: পলিগ্রাফ টেস্ট প্রথম উদ্ভাবন করেন আমেরিকার পুলিশ কর্মকর্তা জন অগাস্ট লারসেন ১৯২১ সালে। প্রথমদিকে এটি অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো।
2. বিতর্ক ও নির্ভুলতা: পলিগ্রাফ টেস্টের নির্ভুলতা নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এটি সবসময় সঠিক ফলাফল দেয় না, কারণ একজন ব্যক্তি তার শারীরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যা পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে।
3. আইনি অবস্থা: পলিগ্রাফ টেস্টের ফলাফল অনেক দেশে আদালতে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয় না। তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষত গোয়েন্দা সংস্থা বা নিরাপত্তা সংস্থার তদন্তে এটি ব্যবহৃত হতে পারে।
ভারতবর্ষে পলিগ্রাফ টেস্টের ব্যবহার
ভারতে পলিগ্রাফ টেস্টের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৮০ এর দশকে। তবে এটি বিশেষত ২০০০ সালের পরে প্রচলিত হয়, যখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের তদন্তে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করে।
ভারতে আইনি অবস্থান: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০১০ সালে রায় দিয়েছে যে পলিগ্রাফ টেস্ট কাউকে বাধ্যতামূলকভাবে করানো যাবে না, এটি শুধুমাত্র স্বেচ্ছায় করা যেতে পারে।
প্রয়োগ: ভারতে এই টেস্টটি প্রধানত অপরাধ তদন্ত, বিশেষ করে উচ্চ প্রোফাইল কেস বা দুর্নীতি সংক্রান্ত কেসে ব্যবহৃত হয়।
- সীমাবদ্ধতা: পলিগ্রাফ টেস্টের নির্ভুলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে যখন কেউ প্রশিক্ষিতভাবে এই টেস্ট এড়ানোর চেষ্টা করে। এজন্য কেবল পলিগ্রাফের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।